Friday, December 4, 2015

সুস্থ ও দীর্ঘ জীবন লাভে তুলসীর রসের অনন্য উপকারিতা



তুলসী গাছ মুলত আমাদের প্রত্যেকেরই চেনার কথা। সাধারণত হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িতে এই গাছটির বেশি দেখা মেলে। কারণ হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা তুলসী গাছকে পবিত্রতার প্রতীক রূপে মান্য করে। এই তুলসী গাছ বহু ভেষজ গুণে গুণান্বিত । আর এজন্যই ছোট্ট তুলসী পাতাকে ভেষজের রানী বা মা বলা হয়ে থাকে  
অন্যদিকে বিভিন্ন রোগবালাই দূরীকরণে তুলসী পাতার কার্যকারিতার কথাও অনেকেরই জানা। গাছটির বৈজ্ঞানিক নাম Ocimum tenuiflorum.
প্রতিদিন তুলসীপাতা সেবন করার অভ্যাস স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
শুধুমাত্র ওষুধ হিসেবেই নয়, প্রচলিত আছে যে, তুলসী পাতা নিয়মিত সেবন করলে সুস্থ ও দীর্ঘ জীবন লাভ করা যায়।
সবাই চায় জীবনকে, শরীরকে, সুস্থ, সুন্দর এবং নিরাপদ রাখতে। আপনিও নিশ্চয়ই তাই চান। আর তা অর্জন করতে অন্যতম ভূমিকা রাখতে পারে এই তুলসী পাতা। তাই আসুন এক্ষুনি জেনে নেই তুলসী পাতার উপকারিতাগুলো।
১. নিরাময় ক্ষমতা :- তুলসী পাতার অনেক ওষুধি গুনাগুণ আছে। তুলসী পাতা নার্ভ টনিক ও স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিকারী। এটা শ্বাসনালী থেকে সর্দিকাশি দূর করে। তুলসীর ক্ষত সারানোর ক্ষমতা আছে। তুলসী পাকস্থলীর শক্তি বৃদ্ধি করে ও অনেক বেশি ঘাম নিঃসৃত হতে সাহায্য করে।
২. জ্বর ভালো করে :- তুলসীর জীবাণু নাশক, ছত্রাক নাশক ও ব্যাক্টেরিয়া নাশক ক্ষমতা আছে। তাই এটা জ্বর ভালো করতে পারে। সাধারণ জ্বর থেকে ম্যালেরিয়ার জ্বর পর্যন্ত ভালো করতে পারে তুলসী পাতা।
#আধা লিটার পানিতে কিছু তুলসী পাতা ও এলাচ গুঁড়া দিয়ে ফুটিয়ে নিন
#
এক্ষেত্রে তুলসী ও এলাচ গুঁড়ার অনুপাত হবে ১:০.৩
#
জ্বাল দিতে দিতে মিশ্রণটিকে অর্ধেক করে ফেলুন
#
মিশ্রণটির সাথে চিনি ও দুধ মিশিয়ে ২-৩ ঘণ্টা পর পর পান করুন
#
এই মিশ্রণটি শিশুদের জন্য অনেক কার্যকরী।
৩. ডায়াবেটিস নিরাময় করে :- তুলসী পাতায় প্রচুর অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ও এসেনশিয়াল অয়েল আছে যা ইউজেনল, মিথাইল ইউজেনল ও ক্যারিওফাইলিন উৎপন্ন করে। এই উপাদান গুলো অগ্নাশয়ের বিটা সেলকে কাজ করতে সাহায্য করে( বিটা সেল ইনসুলিন জমা রাখে ও নিঃসৃত করে)। যার ফলে ইনসুলিন এর সংবেদনশীলতা বৃদ্ধি পায়। এতে ব্লাড সুগার কমে এবং ডায়াবেটিস ভালো হয়।
৪. কিডনির পাথর দূর করে :- রক্তের ইউরিক এসিড-এর লেভেলকে কমতে সাহায্য করে কিডনিকে পরিষ্কার করে তুলসী পাতা। তুলসীর অ্যাসেটিক এসিড এবং এসেনশিয়াল অয়েল এর উপাদান গুলো কিডনির পাথর ভাঙতে সাহায্য করে ও ব্যাথা কমায়। কিডনির পাথর দূর করার জন্য প্রতিদিন তুলসী পাতার রসের সাথে মধু মিশিয়ে খেতে হবে। এভাবে নিয়মিত ৬ মাস খেলে কিডনি পাথর দূর হবে।
৫. ক্যান্সার নিরাময় করে :- তুলসীর অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি কারসেনোজেনিক উপাদান ব্রেস্ট ক্যান্সার ও ওরাল ক্যান্সার এর বৃদ্ধিকে বন্ধ করতে পারে। কারণ এর উপাদানগুলো টিউমারের মধ্যে রক্ত চলাচল বন্ধ করে দেয়। উপকার পেতে প্রতিদিন তুলসীর রস খান।
৬। শিশুদের বিভিন্ন অসুখ যেমন- ঠাণ্ডা, জ্বর,ডায়রিয়া, বমি ইত্যাদি ভালো করে। শিশুদের চিকেন পক্সের দাগ যদি না যায় তাহলে তুলসীর রসের সাথে জাফরান মিশিয়ে ব্যবহার করলে দাগ দূর হবে।
৭। তুলসীর স্ট্রেস কমানোর ক্ষমতা আছে। সুস্থ মানুষও প্রতিদিন ১২ টি তুলসী পাতা চিবালে স্ট্রেস মুক্ত থাকতে পারবেন।
৮। তুলসী পাতা মুখের আলসার ভালো করতে পারে।
৯। মাথা ব্যথা ভালো করতে পারে।এর জন্য চন্দনের পেস্ট এর সাথে তুলসী পাতা বাটা মিশিয়ে কপালে লাগালে মাথাব্যথা ভালো হবে।
১০। ওজন কমতে সাহায্য করে।
১১। দাঁতের জন্য ভালো।
১২। তুলসী পাতা রক্ত পরিষ্কার করে, কোলেস্টেরল কমায়।
১৩। পোকায় কামড় দিলে তুলসীর রস ব্যবহারে ব্যথা দূর হয়।

No comments:

Post a Comment